বিখ্যাত খনার বচন: বিবাহ | জ্যোতিষ | সন্তান গননা

আজকে জানবেন khanar bachan in bengali,বিখ্যাত খনার বচন,খনার বচন বিবাহ,খনার বচন সন্তান গননা,খনার বচন জ্যোতিষ,khonar bochon in bengali,খনার বচন

বিখ্যাত খনার বচন

khanar bachan in bengali:

বিখ্যাত খনার বচন বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই বচনগুলি মূলত কৃষি, আবহাওয়া, জ্যোতিষশাস্ত্র, সমাজজীবন ইত্যাদি বিষয়ে ছিল। তাঁর বচনগুলি বাংলাদেশের গ্রামীণ জনজীবনে বহু শতাব্দী ধরে প্রচলিত আছে।

কিছু বিখ্যাত খনার বচন:

  • কলা রুয়ো না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত। অর্থ: কলাগাছের ফলন শেষে গাছের গোড়া যেন না কাটে কৃষক, কেননা তাতেই সারা বছর ভাত-কাপড় জুটবে তাদের।
  • কাচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে ঠাস ঠাস। অর্থ: বাঁশকে ছোটবেলায় যথাযথ যত্ন না নিলে বড় হয়ে সে ভালো কাজে লাগে না।
  • গাছে গাছে আগুন জ্বলে, বৃষ্টি হবে খনায় বলে। অর্থ: শামুক ধান গাছ বেয়ে উপরে উঠতে থাকলে শিঘ্রই প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে।
  • ঘোল, কুল, কলা তিনে নাশে গলা। অর্থ: ঘোল, কুল এবং কলা এই তিনটি খাবার একসাথে খেলে গলা নষ্ট হতে পারে।
  • চালায় চালায় কুমুড় পাতা, লক্ষ্মী বলেন আছি তথা। অর্থ: কুমড়ো গাছের পাতা যখন ছড়িয়ে পড়ে, তখন ধরে নেওয়া হয় যে, বাড়িতে লক্ষ্মী আসছে।
  • রাজা যায় মাগনে। অর্থাৎ যদি অঘ্রাণে বৃষ্টিপাত হয়, তো, রাজারও ভিক্ষাবৃত্তির দশা, আকাল অবস্থায় পতিত হওয়াকে বোঝায়।
  • ষোল চাষে মুলা/তার অর্ধেক তুলা/তার অর্ধেক ধান/বিনা চাষে পান। অর্থ: বিভিন্ন ফসল চাষের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ চাষ করার প্রয়োজন হয়।
  • ভাত খাইয়া লও শ্বশুর মশাই বৃষ্টি হইবে কাইল। অর্থঃ যদি ছোট ছোট খন্ড খন্ড মেঘে আকাশ ভর্তি থাকে তাহলে পরদিন বৃষ্টি হবে।
  • চৈতে কুয়া ভাদ্রে বান, নরের মুন্ড গড়াগড়ি যান। অর্থঃ চৈত্র মাসে কুয়াশা অথবা ভাদ্রমাসে বন্যা দেখাদিলে মহামারী হয়।
  • আমে ধান, তেতুলে বান। অর্থঃ যে বছর আম বেশী ফলে সেবছর ধানও বেশী হয়।

  • এগুলি ছিল খনার কিছু বিখ্যাত বচন। তাঁর বচনগুলি বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।


বিখ্যাত খনার বচন: বিবাহ | জ্যোতিষ | সন্তান গননা - Bong Source

খনার বচন বিবাহ

খনার বচন বিবাহ হলো বাংলার একটি প্রাচীন প্রবাদ বা উক্তি যা সাধারণত কৃষি, জীবনধারা এবং সামাজিক বিষয়ে উপদেশ দেয়। তবে "বিবাহ" সম্পর্কিত খনার বচন খুব জনপ্রিয় নয়, তবে কিছু বচন বিবাহ বা সংসার জীবনের ওপর আলোকপাত করে।

উদাহরণস্বরূপ:
🔸 "বিবাহ বাড়িতে দরিদ্র নয় সেবা।"
👉 এটি বোঝায় যে বিবাহ একটি সামাজিক বন্ধন এবং এখানে সবার জন্য যত্নশীল মনোভাব দেখানো উচিত।

🔸 "যার বিয়ে, তার মন।"
👉 এর অর্থ হলো বিয়ে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত ও দায়ভার মূলত সেই ব্যক্তির যার জীবন এটির সাথে সংযুক্ত।


খনার বচন বিবাহ তত্ত্ব : শনি ও মঙ্গলবারে বিবাহ যে করে। সে দম্পতি অতি দঃখী হয় ধরা পরে। চৈত্র আ পৌষ মাস করিলে বর্জ্জন। বিবাহেতে সুখ লাভে নর নারীগণ। জন্ম বারে বিবাহ সে দুঃখের কারণ। অমাবস্যা বিষ্টি ভদ্রা রিক্তাতে বারণ। মাতাপিতা গুরুজনে লয়ে অনুমতি, বিবাহ করিলে সুখী হয় সে দম্পতি। শুভদিনের অভাব কভু যদি হয়। গোধুলি লগ্নেতে বিয়া করিবে নিশ্চয়।

খনার বচন জ্যোতিষ

খনার বচন জ্যোতিষ নিয়ে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ, কারণ খনার জ্ঞান মূলত কৃষি, আবহাওয়া, এবং ভবিষ্যদ্বাণীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল। এই প্রাচীন প্রবচনগুলো গ্রামীণ জীবনে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করত।

জ্যোতিষ সম্পর্কিত খনার বচনের উদাহরণ:

🔸 "চৈত্র মাসে হাল চাষ, আষাঢ় মাসে ধান।
ভালো লক্ষণ যার আছে, সারা বছর তার ত্রাণ।"
👉 এটি কৃষিভিত্তিক জ্যোতিষের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। নির্দিষ্ট সময়ের কার্যক্রম এবং প্রকৃতির লক্ষণ দেখে ভবিষ্যতের ফলাফল নির্ধারণ করা হয়।

🔸 "উদয় লগ্নে শনি গ্রহ হলে, ঘরেতে গৃহিণী থাকে সুখ।"
👉 কোনো শুভ গ্রহ উদয়ের সঙ্গে জ্যোতিষশাস্ত্রের সম্পর্ক বোঝায়। এখানে শনিকে শান্তি ও শৃঙ্খলার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

🔸 "মেঘ দেখে বৃষ্টি, গ্রহ দেখে রাশি।
ভালো শস্য ফলাইবে, জেনে বুঝে কাজি।"
👉 জ্যোতিষ এবং প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে কৃষি ও দৈনন্দিন কাজ করার পরামর্শ।

🔸 "সাত দিন গেলে সূর্য বদলায় রাশি,
জেনে বুঝে চললে মিলবে জীবনের কাশি।"
👉 সময়ের পরিবর্তন এবং তার প্রভাব নিয়ে ভাবতে বলা হয়েছে।

🔸 "গ্রহ ভালো যার, রাজা হয় তার।
গ্রহ খারাপ হলে, কষ্টে ভরে ঘর।"
👉 এটি ব্যক্তির ভাগ্য এবং গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবকে বোঝায়।

খনার বচন জ্যোতিষবিদ্যার একটি সহজবোধ্য রূপ, যা জীবন এবং প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মানুষের জীবনের দিকনির্দেশনা দেয়।

খনার বচন সন্তান গননা

খনা একজন প্রাচীন বাঙালি জ্যোতিষী ও গণিতবিদ ছিলেন। তাঁর রচিত বচনগুলি মূলত কৃষি, জ্যোতিষশাস্ত্র, আবহাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে ছিল। তাঁর বচনগুলির মধ্যে সন্তান গণনার একটি বিশেষ পদ্ধতিও উল্লেখ করা হয়েছে।

খনার বচন সন্তান গণনার পদ্ধতি:

খনার সন্তান গণনার পদ্ধতিটি বেশ জটিল এবং গাণিতিক হিসাবের উপর ভিত্তি করে। এই পদ্ধতিতে মায়ের গর্ভধারণের মাস, তিথি, নক্ষত্র ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে সন্তানের লিঙ্গ এবং সংখ্যা নির্ধারণের চেষ্টা করা হতো। তাঁর মতে, এই পদ্ধতি অনুসরণ করে সন্তানের লিঙ্গ এবং সংখ্যা আগেই জানা যেত।

গণনার পদ্ধতির বিস্তারিত:

খনার সন্তান গণনার পদ্ধতিটি বেশ কিছু ধাপে সম্পন্ন হতো। এই পদ্ধতিটি মূলত গর্ভধারণের মাস, তিথি, নক্ষত্র ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে একটি গাণিতিক হিসাব। এই হিসাবের মাধ্যমে একটি সংখ্যা পাওয়া যেত এবং সেই সংখ্যা অনুযায়ী সন্তানের লিঙ্গ এবং সংখ্যা নির্ধারণ করা হতো।

মাসের গর্ভসংখ্যা: প্রথমে মায়ের গর্ভধারণের মাসের একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণ করা হতো।
গাণিতিক হিসাব: এরপর এই সংখ্যার উপর বিভিন্ন গাণিতিক ক্রিয়া প্রয়োগ করে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা পাওয়া হতো।
লিঙ্গ ও সংখ্যা নির্ধারণ: এই পাওয়া সংখ্যা অনুযায়ী সন্তানের লিঙ্গ এবং সংখ্যা নির্ধারণ করা হতো।

বানের পেটে দিয়ে বান
পেটের ছেলে গুণে আন।
নামে মাসে করি এক
আটে হবে সন্তান দেখ।
এক তিন থাকে বান
তবে নারীর পুত্র জান।
দুই চারি থাকে ছয়
অবশ্য তার কন্যা হয়।
থাকিলে শূন্য বা সাত
অবশ্য হয় গর্ভপাত।

এখানে খনার কবিতাটিতে বানের পেটে দিয়ে বান এর অর্থ করা যায়। পাঁচের পিঠে পাঁচ অর্থাৎ পঞ্চান্ন সংখ্যাটি। এই সংখ্যার সাথে যে গর্ভধারিনীর সন্তান গণনা করতে হবে তার নামের অক্ষর সংখ্যা এবং গর্ভ যতো মাসের সেই মাসের সংখ্যা নির্ভুলভাবে একত্রে যোগ করতে হবে। এই মোট সংখ্যাকে আট দিয়ে ভাগ করতে হবে। ভাগ্যের শেষে যদি পাঁচ অবশিষ্ট থাকে তাহলে পুত্র হবে এবং দুই, চার বা ছয় অবশিষ্ট থাকলে কন্যা হবে। ভাগশেষ যদি শূন্য বা সাত অবশিষ্ট থাকে তাহলে গর্ভিনীর গর্ভপাত হবে।


খনার সন্তান গণনার পদ্ধতির সমালোচনা:

খনার সন্তান গণনার পদ্ধতিটি বর্তমান বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এই পদ্ধতিটি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত নয় এবং এটি সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস ও অন্ধবিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল।



খনার বচন সমগ্র বই PDF ডাউনলোড করুন 




Tags: খনার বচন,khanar bachan in bengali,বিখ্যাত খনার বচন,খনার বচন বিবাহ,খনার বচন সন্তান গননা,খনার বচন জ্যোতিষ,khonar bochon in bengali


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url